মাটি—
– পাপিয়া ঘোষ সিংহ
আকাশের কালো মেঘ, সূর্যের আলোকে ঢেকে দিয়ে-
বার্তা দিল, মহাপ্রলয়ের আগমনের।
আমি জামাকাপড়, আসবাব সামলাচ্ছি,
হঠাৎ ঝঞ্ঝা এসে উড়িয়ে দিল, আমার হৃদয়তটের আগল,
উড়ন্ত আঁচল সামলানোর দূর্বার চেষ্টা ব্যর্থ।
পরে মহাপ্রলয়ের তান্ডবে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল আমার সাধের নীড়।
হৃত আবরণ মাথা ও দেহের,
ছিন্নভিন্ন চারিদিক,
আশ্রয়হীন, পাখির মত হাতডানা ঝাপটে
অশ্রুস্রোতে ভাসছে হৃদয়।
বৃষ্টিস্নাত নরম মাটিতে স্থির আমি একবার
দিশেহারা মনে উঁকি দিয়ে দেখলাম,
আমি দাঁড়িয়ে আছি , মাটির বুকে।
না, সরে যায়নি সে আমার পায়ের তলা থেকে।
মন বললো, যে মহাপ্রলয়ে আমি আজ বিধ্বস্ত,
গাছ -গাছালি, মুখ থুবড়ে পড়েছে,
পাখ-পাখালি সর্বহারা।
মাটিও তো সেই মহাপ্রলয়ের মুখোমুখি।
তবুও অটুট, অপরাজেয়।
যুগযুগান্ত ধরে কত জয়রথের চাকায় পিষ্ট,
কত দাম্ভিকের পদভারে দলিত,
রূদ্র প্রকৃতির নিষ্ঠুর লালসায় ধর্ষিতা, লাঞ্ছিতা।
তবুও মাটি চির ভাস্বর, অমলিন,
স্নেহময়ী, কোমল, সহনশীল— জন্মদাত্রী মা,